ঢাকা,সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪

‘ছাত্রজীবনে ঢাকা গেলে কমলাপুর বৌদ্ধ বিহারে থাকতাম, খেতাম’ -তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ

চট্টগ্রাম প্রতিনিধি :: ‘আমি যখন ছাত্রজীবনে ঢাকায় যেতাম তখন আমি কমলাপুর বৌদ্ধ বিহারে থাকতাম। সেখানকার গুরুভান্তে সদ্যঃপ্রয়াত শুদ্ধানন্দ মহাথেরোর বাড়ি আমাদের এলাকায়। আমার বাবার সমসাময়িক। আমি তাঁকে পিতার মতো শ্রদ্ধা করতাম, উনিও আমাকে সন্তানের মতো আদর করতেন। এটার মধ্যে কোনো খাদ ছিল না। দিনের বেলা না খেলেও রাতের বেলা সেখানে খেতাম। এ কথা আমি ঢাকায় বৌদ্ধ মন্দিরসহ সবখানে বলেছি।’

নিজের জীবনের সঙ্গে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির উদাহরণ টেনে কথাগুলো বলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।

আজ শনিবার (১৮ জুলাই) দুপুরে চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলা পরিষদ অডিটরিয়ামে সব ধর্মের নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময়সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন তিনি।

তিনি বলেন, মানুষ বড় হলে অতীতের কথা বলে না, ভুলে যায়। আপনাদের দোয়া ও আশীর্বাদে আল্লাহর রহমতে প্রধানমন্ত্রী আমাকে একবার প্রতিমন্ত্রী, দুবার কেবিনেট মন্ত্রী করেছেন। গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব দিয়েছেন। যাঁরা আমাকে নানাভাবে স্নেহ দিয়েছেন, বড় করেছেন, তাঁদের কথা আমি ভুলতে পারি না। তার মধ্যে অন্যতম শুদ্ধানন্দ মহাথের। আমার ছোটকালে একজন শিক্ষক ছিলেন মৌলভী আবদুর রহমান। তিনি আমাকে দশ বছর পড়িয়েছেন। আমার জীবনের সমস্ত নীতি-নৈতিকতার অনেক কিছু আমি তাঁর কাছে শিখেছি।

তিনি বলেন, কদিন আগে রাঙ্গুনিয়ার উন্নয়নের জন্য আমাকে সরকার থেকে এক কোটি টাকার বরাদ্দ দিয়েছে। তখন আমি ভাগ করে সেখান থেকে চল্লিশ লাখ টাকা দিয়েছি মন্দির, বিহারসহ ধর্মীয় উপাসনালয়ের জন্য। প্রধানমন্ত্রীকে বলে স্বজন কুমার তালুকদার বড়ুয়াকে পরপর দুবার বৌদ্ধধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের ভাইস চেয়ারম্যান করা হয়েছে। একইভাবে পরপর তিনবার হিন্দুধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের সদস্য করেছিলাম শ্রীযুক্ত রাখাল চন্দ্র দাশগুপ্তকে।

মন্ত্রী বলেন, রাঙ্গুনিয়ায় ইসলাম ধর্মের জন্যও অনেক কাজ করা হয়েছে। প্রতিটি ইউনিয়নে ব্যক্তিগত উদ্যোগে একটি করে নতুন মসজিদ করা হয়েছে। শতাধিক মসজিদভিত্তিক মক্তব করা হয়েছে। প্রতিটি মাদরাসায় ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। বিশেষভাবে টাকা এনে হিন্দুধর্মীয় মন্দির ও বৌদ্ধ বিহারগুলোর উন্নয়নে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মাসুদুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন বৌদ্ধধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান স্বজন কুমার তালুকদার বড়ুয়া, চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের সাধারণ সম্পাদক হাফেজ মাওলানা রুহুল আমিন আলকাদেরী, রাঙ্গুনিয়া সংঘরাজ ভিক্ষু সমিতির সভাপতি ধর্মসেন মহাস্থবির, সাধারণ সম্পাদক সুমঙ্গল মহাথের, রাঙ্গুনিয়া বৌদ্ধ কৃষ্টি প্রচার সংঘের সভাপতি জ্ঞানবংশ মহাথের, সৈয়দবাড়ি ধর্মপ্রবর্তন বিহারের অধ্যক্ষ পরমানন্দ থের।

হিন্দুধর্মীয় পুরোহিত সুজন চক্রবর্তী, অসীম চক্রবর্তী, চট্টগ্রাম ও পার্বত্য আঞ্চলিক চার্জ সংঘের প্রধান পালক রেভারেন্ড সহখরীয় বৈরাগী, রাঙ্গুনিয়ার বেতাগী আস্তানা শরীফের পীরজাদা মাওলানা গোলামুর রহমান আশরাফ শাহ, সরফভাটা মোয়াবিনুল উলুম মাদরাসার পরিচালক মাওলানা আবুল বয়ান, উপজেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা মাওলানা আইয়ুব নুরী, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার শামসুল আলম তালুকদার প্রমুখ।

পাঠকের মতামত: